অশোক তাঁতী


 

পাথর

 অশোক তাঁতী


নদীর জল থেকে আলতো তুলে পাথরটাকে রাখলে হাতের তালুতে
আমাকে যেমন বলো তেমনি বললে, তুমি আমার, শুধু আমার
মসৃণ পাথরের গায়ে দাড়ি কাটার মতো সদ্য ঝাঁঝির সবুজ
একহাত থেকে অন্যহাতে গড়িয়ে মাপলে
কতো বন্যা, ঝড়, গ্রীষ্মের খরা গেছে । বুঝলে কিনা জানি না ।
এমারেল্ডের সবুজ, অ্যাকোয়ামেরিনের মতো নীলাভ
তোমার চোখ কুঁচকে থাকে, বুঝতে চাও ঘনত্ব, মদিরতা
পাশের শামুকটা একটা পাতাঝাঁঝি থেকে অন্য পাতাঝাঁঝিতে
আমাকে নয় যেন, এই জল, আকাশ, নদী, শামুককে বললে-
কি সুন্দর, না ! আমি, অপেক্ষা করি তোমার- তোমার পূর্ণদৃষ্টির। 


মিথ্যে যাপন


কিছু সুন্দর মিথ্যের সাথে আমার একান্ত যাপন ।
মাটি খুঁড়ে পাতালে, শুধু পাথর, আমার দু’তালুতে গলিত লাভা
চাকা ঘুরে কোথাও যায় না, গলে পড়ে নিজস্ব অবস্থানে
আর ক্রমাগত লাবডুব, লাবডুব
চিবুকের নীচ থেকে জল গলে নেমে আসে হাতের পাতায়
নোনতা স্বাদ ঝরে পড়ে শরীরে সমস্ত প্রত্যঙ্গে
এই সব চাপা দিই শব্দের অনুগত স্রোতে
এইসব শব্দে যদি তৃষ্ণা মেটে, শব্দের নদী হয়
ধুয়ে ফেলে শ্বেতসর্ষপ শোক ও বিরহ
শব্দে জ্বলে প্রদীপের মৃদু শিখা, ঢাকা পড়ে আগ্নেয় লাভা ।
জল বেয়ে মেঘ, জলদ জীবন ও জন্ম
মেঘ খুঁড়ে স্বর্গের ভূগোল, সেখানে দেশ নেই, শুধু মীরাবাঈ
আমার জন্যে বাতাসে উড়িয়ে দেয় ময়ূরের পালক
আর চৌরাশিয়ার ধুন বাজতে থাকে সোনালি সূর্যে ।

1 comment:

  1. ভালো লাগলো।সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং দুটি কবিতার মধ্যে ব্যবহৃত আভ্যন্তরীণ সেতু

    ReplyDelete

Facebook Comments