মুক্তি মন্ডল

 

ফুলকি 

মুক্তি মন্ডল

দূরে ভাবে মানুষ। সম্মতির ইশারা
অগোচরে নৈশ চোখাচোখির সঙ্কেত 
রেখে ফিরে গেছে সে দরজার ওপারে। 
লোহার ফুলকি ভালবেসে ভুলে গেছে 
বর্ণহীন অনেক তারার হাহাকার। 
আবার কোনদিন ফিরলে দূরবীণে 
মনে মনে দেখব তাঁকে স্ফুলিঙ্গ নীড়ে। 

পুব রহস্য 


নদীর দাগ মুছে জল শূন্য বৈভবে 
যদি কাছে আসো বৈঠার অন্তরে একা 
মনের কালিমা রোদ এসে মুছে দিবে 
জড়িয়ে ধরবে বালি আর কালো শীতে 
কোন কল্প তারায় নিবেনা মৌন বীর 
বুকের পাশে রবে রাত জাগা প্রহরী 
তুমি চুম্বনে দিও তাকে তৃষ্ণার জল 
দেহ উত্তাপে ফুটবে নদীর সিথান 


বধির স্মৃতি ফলক 


অনেক বার স্বপ্নের মধ্যে 
সাঁকো পার হতে গিয়ে পড়ে গেছি 

সঙ্কীর্ণ নদীর তলে 
জলকাদায় মাখামাখি 
পাড় মাতালদের সঙ্গে দেখা হয়েছে 

বালু আর পাথরের সঙ্গ পেয়ে 
মাতালহাসির প্রীতি-সখ্যতা থেকে 
নিজেকে ছিন্ন করতে পারিনি 

কবরস্থানের নীরবতা ছুঁয়েও দেখেছি
মাতালদের মতো এক একটা 
বধির স্মৃতি ফলকও 
সঙ্গ পেলেই হেসে ওঠে মানুষের মতো 

কালো বালি 

যত নিচু হই
ততই নিজের অক্ষমতা দূরে সরে 

নিকটে আসে ফুলের ঘ্রাণ 
মুছে যেতে দেখি 
বাঁকা দৃষ্টির সকল প্রক্ষেপণ 

শরীর নির্ভার হয় 
টের পাই নিচুতাচর্চার মোহবিষ্টে 
সঙ্কীর্ণ মনুষ্য সমাগম 

আমার ঠাঁই নাই ওখানে 

মিশি বালি আর রোদ ভরা মনে 
ভেসে থাকি কালো জলাশয়ে 
মোহ থেকে খুলে রাখি দেহমুগ্ধ রাত 

নিচু হয়ে কালো বালি শরীরে মেশাই 

ম্যাজিশিয়ান


কবে আসবেন চাড়াল 
ম্যাজিশিয়ান?
আমরা দূরবীণে চোখ রাখব
কৃৎকৌশল ভুলে
নৈঃসঙ্গ তরঙ্গের দেয়ালে 
তিনি আঁকবেন শোক চিহ্ন ট্যালি 

দেখাবেন ভেল্কিবাজী চাল
আমরা দেখব কেমন করে 
গুম হচ্ছে মানুষ 
কিভাবে নিখোঁজ আস্তানা থেকে 
জ্যান্ত ফিরে আসা 
মানুষেরা হয়ে উঠছে মূক 

তিনি আমাদের অকেজো 
স্তব্ধ রেটিনা খুলে দেখাবেন 
স্তরীভূত হাহাকার 

আমরা দেখতে থাকব মুমূর্ষু মেঘদল

No comments:

Post a Comment

Facebook Comments